দীর্ঘ ৩২ বছর পরও লাশ অক্ষত!

লাশ দাফনের দীর্ঘ ৩২ বছর পর পুরোপুরি অক্ষত অবস্থায় কবর থেকে বছির উদ্দিন ওরফে ঘুঘু মুন্সী নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে এলাকাবাসী। এমনকি কাফনের কাপড়ও অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেছে। ধরলা নদীর প্রবল ভাঙনে কবর ভেঙ্গে গেলে এলাকাবাসী ভাঙ্গা কবর থেকে লাশ উদ্ধার করে গতকাল সোমবার বিকালে পুনরায় লাশ কবরস্থ করেছে। এমন আশ্চর্যজনক ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের চর কৃষ্ণপুর গ্রামে। এর আগে গত ৮ বছর পূর্বেও ধরলার ভাঙনের মুখে তার লাশ কবর থেকে বের হলে গ্রামবাসী তার লাশ কৃষ্ণপুর ঈদগাহ কবর স্থানে দাফন করে। এবারো কবরস্থানটি ভাঙনের কবলে পড়ে পুনরায় লাশ কবর থেকে বের হয়ে আসলে গ্রামবাসী লাশ উদ্ধার করে ধরলা নদীর পূর্ব প্রান্তের চর মাধবরাম গ্রামের ফজলুল করীম (রহ.) জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে পুনরায় দাফন করে। এদিকে ৩২ বছর পর লাশ অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে এ খবর মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে কুড়িগ্রামসহ আশপাশ এলাকার হাজার হাজার মানুষ লাশটিকে একনজর দেখার জন্য ছুটে আসে। তবে ইসলামী শরীয়ায় বাধ্যবাধকতা থাকায় লাশের মুখ কাউকে দেখতে দেয়া হয়নি। ফজলুল করিম রহ. জামিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতী আবুল হাসান আনছারী বলেন, লাশের শরীর ও মুখ দেখে মনে হয় মানুষটি এই বুঝি ঘুমিয়ে গেলো। ঘুঘু মুন্সীর ছেলে হযরত আলী (৬৫) ও আশরাফ আলী (৫০) জানান, ৩২ বছর আগে তাদের পিতা স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি দীর্ঘদিন গ্রামের মসজিদে ইমামতী করেছেন। এ ছাড়াও তিনি চরমোনাইর পীর সৈয়দ এসহাক (রহ.) ও সৈয়দ ফজলুল করীম (রহ.) এর মুরীদ থাকার সুবাদে সর্বদা আল্লাহর ইবাদত বন্দেগী ও জিকির-আযকারে লিপ্ত থাকতেন। সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউপি সদস্য তৈয়ব আলী জানান, ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আলেম-ওলামাদের উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করে পুনরায় লাশ কবরস্থ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মোগলবাসা ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক জানান, মৃত বছির উদ্দিন মুন্সী একজন ঈমানদার ও বুজুর্গ ব্যক্তি ছিলেন। পুনরায় লাশ দাফনের সময় ঘটনাস্থলে আসা সদর থানার এসআই আব্দুল হাই জানান, লাশের ওয়ারিশদের এ ব্যাপারে কোন আপত্তি না থাকায় লাশ দাফনের ক্ষেত্রে কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। লাশ দাফনের সময় উপস্থিত ছিলেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ, জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ, পৌর মেয়র নুর ইসলাম নুরু, সাবেক মেয়র আবু বকর সিদ্দীক, জেলা মুজাহিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল হকসহ সর্বস্তরের হাজার হাজার মানুষ।