Sunday, July 8, 2012

কাল ৯ জুলাই।
কাল ৯ জুলাই। সারা বিশ্বের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে এই ৯ জুলাই নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। এদিন বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট ব্যবস্থায় বিপর্যয় নেমে আসতে পারে—এ আতঙ্ক প্রায় সব খানেই ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু আসলেই কী ঘটতে যাচ্ছে, ৯ জুলাইয়ে? ইন্টারনেট-ব্যবস্থার পুরোপুরি বিপর্যয়, নাকি কেবল বন্ধ হয়ে যাবে ইন্টারনেট অসচেতন কিছু মানুষের অন্তর্জাল সংযোগ?
অবশ্য সম্প্রতি ডিএনএস চেঞ্জার ওয়ার্কিং গ্রুপের একজন মুখপাত্র এ বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর মতে, ৯ জুলাই সারা বিশ্বের ইন্টারনেট-ব্যবস্থায় বিপর্যয় নেমে আসবে—এমনটা ধারণা করা বোকামিই হবে। হয়তো কিছুসংখ্যক কম্পিউটার ব্যবহারকারী ২০০৭ সালে ছড়িয়ে পড়া ‘ডিএনএস চেঞ্জার ম্যালওয়্যার’ বা অ্যালুরিয়ন নামের এক ট্রোজান ভাইরাসের কারণে ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারেন। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে টাইম ম্যাগাজিন।
এ প্রসঙ্গে ডিএনএস চেঞ্জার ওয়ার্কিং গ্রুপের মুখপাত্র ব্যারি গ্রিন জানিয়েছেন, পৃথিবীতে প্রায় ২০০ কোটি কম্পিউটার ব্যবহূত হচ্ছে। যাঁরা তাঁদের কম্পিউটার থেকে অ্যালুরিয়ন নির্মূল করেননি, তাঁরা সমস্যায় পড়তে পারেন। অবশ্য অ্যালুরিয়ন ম্যালওয়্যারযুক্ত কম্পিউটার ব্যবহারকারীর সংখ্যাও খুব বেশি নয়। যাঁরা অনেক সতর্কতার পরও সচেতন হননি, কেবল তাঁরাই খানিকটা বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারেন। এতে পুরো ইন্টারনেট-ব্যবস্থায় বিপর্যয়ের মতো কোনো ঘটনা ঘটবে বলে মনে হয় না। এ ছাড়া এই ম্যালওয়্যারটি থেকে মুক্ত হওয়া সহজ।
ব্যবহারকারীরা তাঁদের কম্পিউটার এই ট্রোজানে আক্রান্ত কি না, তা পরীক্ষা করার জন্য http://www.dns-ok.us/ ঠিকানায় ভিজিট করে দেখে নিতে পারবেন। যদি সবুজ সংকেত দেখায়, তবে ম্যালওয়্যারমুক্ত আর লাল সংকেত দেখালে সেই কম্পিউটারে এই ভাইরাসটি বাসা বেঁধেছে।
অবশ্য এদিকে কম্পিউটার নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, বিশ্বে ৯ জুলাই আড়াই লাখেরও বেশি কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। পিসি ও ম্যাক কম্পিউটারের জন্য ২০০৭ সালে ছড়িয়ে পড়া ‘ডিএনএস চেঞ্জার ম্যালওয়্যার’ বা অ্যালুরিয়ন নামের এক ট্রোজান ভাইরাসের কারণে ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারেন ব্যবহারকারীরা। এক খবরে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
কম্পিউটার নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, ‘ডিএনএস চেঞ্জার’ নামের এই ট্রোজান মূলত আক্রান্ত কম্পিউটারের ইন্টারনেট সেটিংস পরিবর্তন করে ফেলে। এর ফলে কোনো ওয়েবসাইটে ঢোকার সময় সঠিক ইউআরএল বা ঠিকানা দিলেও ট্রোজান যারা তৈরি করেছে, তাদের ডিএনএস সার্ভার ঘুরে তবেই ওয়েবসাইটটি আসে। এতে হ্যাকাররা ইচ্ছামতো আক্রান্ত কম্পিউটারের ব্যবহারকারীকে তাদের ওয়েবসাইটে পাঠিয়ে দিতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারনেট নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ডেটিকুই জানিয়েছে, সতর্কতা জারির পরও যেসব কম্পিউটার থেকে ম্যালওয়্যার অপসারণ করা হয়নি, তেমন আড়াই লাখ কম্পিউটার ঝুঁকির মধ্যে রয়ে গেছে।
প্রসঙ্গত, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই অনেক দিন আগেই ট্রোজান ভাইরাস নির্মাতাদের গ্রেপ্তার করেছিল। পাশাপাশি তাঁদের ডিএনএস সার্ভারগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল। ট্রোজানের সার্ভার বন্ধ করে দেওয়া হলেও এখনো বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার ম্যাক ও উইন্ডোজ কম্পিউটারে এই ট্রোজান রয়েছে। আক্রান্ত কম্পিউটারগুলো সচল রাখতে এফবিআই ব্যাকআপ হিসেবে নিজেরাই কিছু সার্ভার বসিয়েছিল। ৯ জুলাই এফবিআই এই সেবাটি বন্ধ করে দিতে যাচ্ছে। এফবিআইয়ের ব্যাকআপ সার্ভারের মাধ্যমে ডিএনএস রাউটিং (একধরনের ডোমেইন নেম সিস্টেম কাঠামো) এখন ঠিকমতো চললেও জুলাইয়ের ৯ তারিখ এফবিআই এসব সার্ভার বন্ধ করে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ট্রোজান আক্রান্ত কম্পিউটারগুলো ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।
এদিকে এফবিআই জানিয়েছে, আক্রান্ত পিসি ব্যবহারকারীরা যদি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, তাহলে ৯ জুলাই যখন অস্থায়ী সার্ভার বন্ধ করে দেওয়া হবে, তখন তারা আর ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে না।
কম্পিউটার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা এ সমস্যা সমাধান প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, এই ম্যালওয়্যার থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। ইন্টারনেটে বিভিন্ন সহজ টুল ব্যবহার করে এই ম্যালওয়্যার অপসারণ করা যাবে। যদি কোনো কম্পিউটারে ট্রোজান খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে যেসব অ্যান্টি-ভাইরাস টুল দিয়ে তা নির্মূল করতে হবে তার তালিকা পাওয়া যাবে http://www.dcwg.org/fix/ লিংকে।

1 comment: